নবম শ্রেণির বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট
শান্ত ডিসেম্বর মাসের এক সকালে স্কুলে যাচ্ছিলাে। শীত নিবারনের জন্য সে একই সাথে দুটি শার্ট পরলাে কিন্তু তাতে ও তার শীত কমলাে না। অথচ তিন মাস আগে ও একটি মাত্র শার্ট পরে সে স্কুলে যেত
ক. স্লিভার কাকে বলে?
খ. নাইলনকে নন সেলুলােজিক তন্তু বলা হয় কেন ব্যাখ্যা কর
গ. শান্তর কি ধরনের কাপড় পরা উচিত ছিল ব্যাখ্যা কর
ঘ. উদ্দিপকের আলােকে শান্তর ভিন্ন ধরণের অনুভূতি হওয়ার কারন বিশ্লেষণ কর
প্রশ্নঃ স্লিভার কাকে বলে?
উত্তরঃ স্লিভার লিনেন জাতীয় সুতাকে অত্যান্ত সুক্ষ্ম এবং মিহি করার জন্য কার্ডিং খুব সরু ছিদ্র পথে এক ধরনের ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ধরনের কম্বিং করা হয় একে হেলকিং বলে। এর ফলে তন্তু পাতলা আস্তরের মত হয় একে স্লাইভার বা স্লিভার বলে।
প্রশ্নঃ নাইলনকে নন সেলুলােজিক তন্তু বলা হয় কেন ব্যাখ্যা কর?
উত্তরঃ সেলুলোজ হচ্ছে উদ্ভিদ দেহের এক প্রকার কার্বহাইড্রেট দিয়ে গঠিত তন্তু। কিন্তু নাইলন এই ধরনের কোন প্রাকৃতিক সেলুলোজ থেকে তৈরি নয়। নাইলন সাধারনত এডিপিক এসিড এবং হেক্সামিথিলিন ডাই এমিন নামক রাসায়নিক পদার্থের বিক্রিয়ার মাধ্যমে পলিমার যৌগ তৈরি করা হয় এটি সুক্ষ্ম তন্তুর ন্যায় লম্বা পলিমার। এই পলিমারজাতক তন্তুকে নাইলন বলে । যেহেতু এটি উদ্ভিজ্য সেলুলোজ বিহীন এবং কৃত্রিম ভাবে তৈরি। তাই একে নন-সেলুলোজিক তন্তু বলা হয়
প্রশ্নঃ শান্তর কি ধরনের কাপড় পরা উচিত ছিল ব্যাখ্যা কর?
উত্তরঃ উদ্দিপকে শান্ত দুটি শার্ট পরলেও তা ছিল সুতি বা লিনেন জাতীয় তন্তু দিয়ে তৈরি সুতার শার্ট। এটি সাধারনত গরমের দিনে পরা আরামদায়ক এতে গরম লাগে কম কারন এই জাতীয় তন্তুর সুতা তাপর তাপ ধারন ক্ষমতা কম তাই গরমের দিনে দেহের তাপ বাইরে সহজে চলে যেতে পারে গরম লাগে কম। কিন্তু শান্ত যখন দুটি শার্ট পরেছিল তখন ছিল ডিসেম্বর মাস। অর্থাৎ শীতকাল। এমনিতে শীতকালে প্রচুর ঠান্ডা থাকে তার উপর পোষাক যদি দেহের তাপমাত্রা পোষাকের ভেতর ধরে রাখতে না পারে তবে ঠান্ডা অনুভূত হবে। তাই শান্তর উচিত ছিল রেশম বা পশমী তন্তুর পোষাক পরা। কারন সিল্ক বা রেশম এবং পশম হচ্ছে উচ্চ মাত্রায় তাপ কুপরিবাহী। এই তন্তুর পোষাক পড়লে আমাদের দেহ থেকে নির্গত তাপ বা উষ্ণতা রেশম বা পশমের পোষাক, পোষাকের ভেতরেই আটকে রাখে বা তাপ ধরে রাখে। উষ্ণতাকে বাইরে যেতে বাধা দেয় ফলের ভেতরে দেহের নিজস্ব তাপে শরীর উষ্ণ থাকে এবং শীত অনুভূত হয়না। অপরদিকে শীতকালের বাইরের আবহাওয়ার ঠান্ডাও পশম বা রেশমের পোষাক ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করেনা। কারন এই পোশাক তাপ কুপরিবাহী হওয়াই তা কোন তাপকে বাইরে যেতেও দেয়না, ভেতরে প্রবেশ করতেও দেয়না বলে শীতকালে শরীর ঊষ্ণ থাকে। এবং অনেক পোষাক পরার দরকার হয়না
প্রশ্নঃ উদ্দিপকের আলােকে শান্তর ভিন্ন ধরণের অনুভূতি হওয়ার কারন বিশ্লেষণ কর?
উত্তরঃ উদ্দিপকে শান্ত তিন মাস আগেও একটি শার্ট পরে স্কুলে যেত কারন তখন ছিল মূলত গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকালে বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রা যথেষ্ট বেশি থাকে। তাই স্বাভাবিক ভাবে ঠান্ডা লাগেনা। এই সময়ে হালকা সুতি কাপড় পরা যায়। সুতি বা লিনেন রেয়ন জাতীয় তন্তুর পোষাক খুব বেশি মাত্রায় তাপ ধরে রাখতে পারেনা কারন এগুলো ভাল তাপ কুপরিবাহক নয়। এই কারনে গ্রীষ্মকালে শান্ত একটি শার্ট পরলে দেহের তাপ বা উষ্ণতা সহজে শার্ট ভেদ করে বাইরে চলে যেত ফলে অতিরিক্ত গরম লাগতনা। কিন্তু যখন ডিসেম্বর মাস আসলো তখন আবহাওয়া ঋতু পরিবর্তন হয়ে গেল। গ্রীষ্মকাল চলে যেয়ে শীত কাল আসলো। আমাদের দেশে ডিসেম্বর থেকে শীত শুরু হয়ে জানুয়ারী ফেব্রুয়ারী পুরা শীতকাল থাকে এবং হাড় কাপানো শীত অনুভূত হয়। ফলে এই শীতের পরিবেশে শান্ত লিনেনের শার্টে খুবই শীত অনুভব করলো। তাই সে শীত থেকে রক্ষা পেতে আরও একটি শার্ট গায়ে দিয়ে নিল। কিন্তু সেই শার্টটিও একই লিনেন বা রেয়ন তন্তু হওয়ায় এই দুই পোষাক দেহের তাপ দেহে ধরে রাখতে পারল না। উপরন্তু বাইরের শীতল তাপমাত্রা শার্ট ভেদ করে দেহে প্রবেশ করার ফলে শান্ত সম্পূর্ণ ভিন্ন এক শীতল অনুভূতি অনুভব করলো। আসলে অধিকাংশ তন্তু সেলুলোজ বা লিনেন বা রেয়ন থেকে তৈরি হয়। যা যথেষ্ট তাপ কুপরিবাহক নয়। এগুলোতে সাধারন বায়ু কুঠরী তুলার নায় আশে ভরা থাকেনা, এই সুতা গুলো হয় মসৃন তাই সহজে এই সুতার কাপড় ভেদ করে তাপ চলে যেতে পারে। একারনে গ্রীষ্ম ছেড়ে শীতকাল চলে আসলে একই পোষাকে শীত অনুভব হবে। এই শীতকালে তাই রেশম বা পশম জাতীয় পোষাকই কেবল তাপ ধরে রেখে দেহ উষ্ণ রাখতে সামর্থ্য হয়